কক্সবাজার সৈকতে বঙ্গবন্ধু

আবদুল আজিজ, বাংলা ট্রিবিউন •

রাজনৈতিক জীবনের পুরোটা সময় মানুষের দুঃখ-দুর্দশার খবর নিতে সমগ্র বাংলাদেশ ঘুরে বেড়িয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এরই ধারাবাহিকতায় কক্সবাজারেও এঁকেছেন নিজের পদচিহ্ন।

১৯৬৯ সালে কক্সবাজার সফরের এক পর্যায়ে সমুদ্র সৈকত ঘুরে দেখেন তিনি। সে সময়ে কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া ঝাউতলাস্থ পুরনো সায়মন হোটেলে বঙ্গবন্ধুর সম্মানে ক্যান্ডেল লাইট ডিনারেরও আয়োজন করা হয়েছিল। এমনই কিছু দুর্লভ ছবির কর্নার রয়েছে তারকামানের হোটেল সায়মন বিচ রিসোর্টে। এছাড়া জীবদ্দশায় অন্তত ১২ বার কক্সবাজার সফর করেছেন তিনি।

কক্সবাজার সায়মন বিচ রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাহবুবুর রহমান বলেন, ১৯৬৯ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান কক্সবাজার সফরের সময় হোটেল সায়মনে ডিনার করেন এবং সৈকতের সৌন্দর্য উপভোগ করেন। ওই সময়ে আমার বাবা সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী প্রকৌশলী মোশারফ হোসেন বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর পর তার দুই মেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহেনাও সায়মন হোটেলে অতিথি হয়ে এসেছিলেন।

কক্সবাজারের সিনিয়র সাংবাদিক তোফায়েল আহমদ জানান, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বপ্রথম ১৯৫৮ সালে কক্সবাজার সফর করেন। সর্বশেষ ১৯৭৫ সালের ১০ জানুয়ারি কক্সবাজার সফর করেছিলেন তিনি। এভাবে তিনি বিভিন্ন কারণে ১৩ থেকে ১৪ বার কক্সবাজার এসেছিলেন।’

কক্সবাজারকে ঘিরে বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের অবদানের কথা উল্লেখ করে সাংবাদিক তোফায়েল আহমদ আরও জানান, ওই সময়ে তিনি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বালুকাময় ১০০ একর জমিতে ঝাউগাছ বনায়নের নির্দেশনা দেন বনবিভাগকে। এ কারণে প্রাকৃতিক ঘূর্ণিঝড় ও সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস থেকে উপকূলীয় অঞ্চল রক্ষা এবং সৈকতের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করেছে।

কক্সবাজারের তরুন লেখক কালাম আজাদ তার একটি গ্রন্থে লিখেছেন, ‘স্বাধীনতা পূর্ব ও পরবর্তী সময়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান ১২ বার কক্সবাজার সফর করেছেন। কক্সবাজারের রাজনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা অনবদ্য। বঙ্গবন্ধুর জন্মের শতবর্ষ পেরিয়ে যাচ্ছে, অথচ কক্সবাজারে বঙ্গবন্ধুর অবদান ও রাজনৈতিক ভূমিকা নিয়ে উল্লেখযোগ্য কোনও গবেষণা হয়নি, এ বিষয়ে রচিত হয়নি একটিও স্বতন্ত্র গ্রন্থ। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বুকে নিয়ে কক্সবাজারে এখনও অনেক প্রবীণ ব্যক্তি জীবিত আছেন। আরও বিলম্ব করলে হয়তো তারা সবাই গত হয়ে যাবেন।’ এ অবস্থায় কক্সবাজারে বঙ্গবন্ধুর আগমন ও অবদানের ইতিহাস সংরক্ষণের এখনই সর্বোচ্চ সময় বলে মন্তব্য করেন তিনি।